Monday , 23 December 2024
নিউজ টপ লাইন
‘সুন্দরবন ধ্বংস হলে দেশের অস্তিত্বও বিপণ্ন হবে’

‘সুন্দরবন ধ্বংস হলে দেশের অস্তিত্বও বিপণ্ন হবে’

স্টাফ রিপোর্টার :   বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মীর তারেক আলী বলেছেন, ‘সুন্দরবন ধ্বংস হলে বাতাসে কার্বনের মাত্রা এবং ঝড়ে ক্ষতির পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। এতেই বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হবে।’

‘সুন্দরবন রক্ষায় মংলা-ঘষিয়াখালী নৌপথের অপরিহার্যতা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় শুক্রবার তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর পুরানা পল্টনের কমরেড মনি সিংহ সড়কের মুক্তি ভবনে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি (এনএসপিএসআরআর) এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মীর তারেক আলী বলেন, ‘রামপালের তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র ও বনের ভেতর দিয়ে জাহাজ চলাচলসহ নানাবিধ কারণে সুন্দরবনের অস্তিত ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে। এ সব কারণে সুন্দরবন ধ্বংস হলে বাংলাদেশের অস্তিত্বও বিপণ্ন হবে।’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন আছে বলেই বাংলাদেশের বাতাসে কার্বনের মাত্রা কম থাকে। সুন্দরবন আছে বলেই সিডরের মতো ঝড়ে বাংলাদেশের ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক কম হয়। সুন্দরবন আছে বলেই এ দেশে পরিবেশের ভারসাম্য অনেকাংশেই রক্ষা পায়। তাই সুন্দরবন রক্ষায় পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন সব প্রকল্প বাতিল করা জরুরী হয়ে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জাপান-জার্মানিসহ উন্নত বিশ্ব যখন পরিত্যাগ করছে তখন আমাদের দেশে ভয়াবহ ঝুঁকি নিয়ে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। দেশে যতসব স্ববিরোধী পরিকল্পনা করা হচ্ছে, এ সব পরিকল্পনা দেশকে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।’

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশ যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি তুসার রেহমান, পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন ‘পিস’র মহাসচিব ইফমা হুসেইন, যুব ইউনিয়নের সেকেন্দার হায়াত ও নিরাপদ সড়কের রফিকুল ইসলাম সবুজ। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল।

ম. ইনামুল হক বলেন, রামপাল ও পদ্মাসেতুসহ বিভিন্ন প্রকল্পে এ্যাডভ্যান্সমানিতে কাগজে-কলমে কাজ এগিয়ে যায়। ‘মংলা-ঘষিয়াখালী নৌপথ’ ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্পের কাজেও দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) ও বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষসহ (বিআইডব্লিউটিএ) সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অবস্থানপত্র দিতে হবে।

মতবিনিময় সভার মূল বক্তব্যে আশীষ কুমার দে বলেন, ‘সরকারের ভেতরেরই একটি অংশ সুন্দরবন রক্ষায় আন্তরিক নন। জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও পরিবেশবিধ্বংসী এই চক্রের মধ্যে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিও রয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা গুরুত্বপূর্ণ মংলা-ঘষিয়াখালী নৌপথটি শতভাগ সচল ও স্থায়ী করার ক্ষেত্রে আদৌ আন্তরিক নন। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় লালিত অবৈধ দখলদারদের ক্ষমতার দাপটের কাছে প্রশাসন অসহায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মংলা-ঘাষিয়াখালী নৌপথ রক্ষায় ওই এলাকায় স্টেট এমারজেন্সি (রাষ্ট্রীয় জরুরী অবস্থা) ঘোষণা ও সেনা মোতায়ানসহ ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে মনজুরুল আহসান খান বাংলাদেশের অস্তিত্বের স্বার্থে সুন্দরবন রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি ঘনবসতিপূর্ণ এই দেশে ভেবেচিন্তে পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের পরামর্শ দেন।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

November 2015
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
Scroll To Top