Monday , 23 December 2024
নিউজ টপ লাইন
রাজনীতি নিষিদ্ধ হচ্ছে মাদরাসা শিক্ষকদের

রাজনীতি নিষিদ্ধ হচ্ছে মাদরাসা শিক্ষকদের

কোনো ধরনের রাজনৈতিক তৎপরতায় অংশ নিতে পারবেন না মাদরাসা শিক্ষকেরা। এমপিওভুক্ত মাদরাসা শিক্ষকরাই মূলত এর আওতায় আসবেন। ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড-২০১৮’ আইনের চূড়ান্ত খসড়ার বিবিধ ধারায় এ বিধিনিষেধ আরোপের কথা বলা হয়েছে। সম্প্রতি চূড়ান্ত খসড়াটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ।

এতদিন মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড পরিচালিত হয়ে আসছে ১৯৭৮ সালের মাদরাসা শিক্ষা অর্ডিন্যান্সের অধীনে। এ অর্ডিন্যান্সকে আইনে রূপান্তর ও যুগোপযোগী করতে এ উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবিত এ আইনের নামকরণ করা হয়েছে ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড-২০১৮’ আইন। এর খসড়া চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয় এবং তা ভেটিংয়ের পর চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আইনের খসড়া যাচাই-বাছাই করে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে উত্থাপন করা হবে।

মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাদরাসা) রওনক মাহমুদ মাদরাসা শিক্ষকদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত না হওয়া এবং সব ধরনের রাজনৈতিক তৎপরতায় অংশ না নেয়ার বিধান প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় প্রস্তাব করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে নয়া দিগন্তকে তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যেমন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার ব্যাপারে কিছু আইনি বিধিনিষেধ ও বাধ্যবাধকতা রয়েছে, এখানেও (মাদরাসা শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও) তদ্রুপ বিধিনিষেধের কথা প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া যারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন, তাদের ব্যাপারে কিছু বিধিনিষেধ আগে থেকেই রয়েছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বর্তমানের আচরণবিধি প্রতিপালনে ব্যাপক শিথিলতা লক্ষ করা যায়। বিষয়টি মোটেই সুখকর নয়। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কখনোই রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মতো আচরণ করতে পারেন না।

প্রস্তাবিত আইনে সরকার স্বীকৃত ধর্মীয় শিক্ষা ও ধর্ম চর্চার জন্য প্রতিষ্ঠিত ফোরকানিয়া মাদরাসা, ইবতেদায়ি মাদরাসা, দাখিল মাদরাসা আলিম ও কামিল মাদরাসার শিক্ষকদের রাজনীতিতে অংশ না নেয়ার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা আরোপ রয়েছে। ফোরকানিয়া ও ইবতেদায়ি মাদরাসাকে সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষার সমমান ও এর শিক্ষকদের অনুরূপ মর্যাদা দেয়ার বিধিবিধান অনুমোদন করা হয়েছে। ফলে তাদেরও একই বিধিনিষেধের আওতায় আনা হবে। প্রস্তাবিত আইনে সে কথাই বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, মন্ত্রণালয় সূত্র নয়া দিগন্তকে বলেন, কেউ রাজনীতি বা নির্বাচন করতে চাইলে, তাকে পদত্যাগ করেই রাজনৈতিক তৎপরতায় অংশ নিতে হবে। এটি পুরনো বিধান। সরকারি চাকরিজীবীদের রাজনীতি করার ব্যাপারে কিছু শর্ত রয়েছে। সেটির কথাই এখানে বলা হয়েছে। সকল শিক্ষা বোর্ডের আইনেই এ ধরনের বিধিনিষেধ রয়েছে। এখানেও (মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড-২০১৮ আইন) সে সব বিধিনিষেধ ও শর্তের কথাই বলা হয়েছে। এ সব শর্ত ভঙ্গ করলে চাকরিচ্যুতসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে সরকার।

উল্লেখ্য, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড একটি বিশেষায়িত শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডের অধীনে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার বিষয়গুলোকেও পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ১৯৭৮ সালের মাদরাসা শিক্ষা অর্ডিন্যান্সের আওতায় অনেক কিছুই অস্পষ্ট থেকে যায়। এ ছাড়া মাদরাসা শিক্ষাকে আধুনিকায়ন করায় ওই অধ্যাদেশকে আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। আইনের খসড়ায় বেসরকারি মাদরাসাগুলো কোনো কোনো বিষয় খুলতে পারবে, কী ধরনের বিষয় পাঠদান করবে, পাবলিক পরীক্ষা পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনের বাধ্যবাধকতাসহ অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডে যেসব বিষয় রয়েছে, তা বিশেষায়িত এ বোর্ড কিভাবে চালু করবে তার সব ধরনের আইনি কাঠামোর অনুমতি দেয়া হয়েছে। ২০১০ সালে প্রণীত শিক্ষা আইনের আওতায় মাদরাসা শিক্ষা কারিকুলামের ব্যাপক পরিবর্তন করা হয়েছে। ২০১৩ সালে প্রণীত মাদরাসা বোর্ডের কারিকুলামে তা সন্নিবেশিত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের আওতায় সে সব বিষয়াবলিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

October 2018
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
Scroll To Top