আন্তর্জাতিক ডেস্ক| মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করতে যাচ্ছে অং সান সু চি’র দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি বা এনএলডি। প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, এনএলডি অন্তত ৭০ শতাংশ ভোট পেয়েছে। অবশ্য এখনো নির্বাচনের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয় নি।
তবে এরই মধ্যে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন সেনাসমর্থিত ক্ষমতাসীন দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি বা ইউএসডিপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাই উ। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখনো ভোট গণনা চলছে। তবে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা তথ্যের ভিত্তিতে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন তাই উ।
বিদেশি সাংবাদিকেরা জানিয়েছেন, গত ২৫ বছরের মধ্যে দেশটিতে গতকাল সবচেয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সারা দেশেও এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ লক্ষ্য করা গেছে।
কিন্তু নির্বাচনে সু চি’র বিজয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ সু চি এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা মুসলমান ইস্যুটি সমাধানের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য দেন নি। তিনি এ বিষয়ে ‘ধীরে চলো নীতি’ অনুসরণের পক্ষে।
কারণ গত জুনে দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, রাতারাতি রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেছিলেন, এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ইস্যু। এর সঙ্গে অনেক জাতিগত এবং ধর্মীয় গোষ্ঠী জড়িয়ে রয়েছে। তার মতে, এক গোষ্ঠীর জন্য কিছু করতে গেলে অন্য গোষ্ঠীগুলোর ওপর তার প্রভাব পড়বে। এ কারণেই রোহিঙ্গা সঙ্কটটি অত্যন্ত জটিল পর্যায়ে রয়েছে।
বিশ্বের অন্যতম নির্যাতিত জাতি হচ্ছে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা। ২০১২ সাল থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের অবস্থার নাটকীয় অবনতি হতে শুরু করে। উগ্র বৌদ্ধদের হামলার কারণে এ পর্যন্ত লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। অনেকেই শরণার্থী শিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। রাখাইন রাজ্যের ওই অদিবাসীদের সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র করেছে উগ্র বৌদ্ধরা। ফলে সাম্প্রতিক আদমশুমারিতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণনায় ধরা হয়নি এবং ভোটার করা হয় নি। দেশটির সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে গণ্য করতে রাজি নয়।