কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২৩) ছিলেন পরিবারের সবার ছোট। তার মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ পুরো গ্রাম।
ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আবু সাঈদ ছিলেন সবচেয়ে মেধাবী। তাই পুরো পরিবারের স্বপ্ন ছিল আবু সাঈদকে ঘিরে।
আবু সাঈদের এক ভাই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। অন্যরা পড়েছেন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যন্ত।
আদরের ছোট ভাইকে হারিয়ে হতভম্ব বড় ভাই রমজান বলেন, আমার বাবা মকবুল হোসেন শারীরিক অসুস্থতায় শয্যাশায়ী। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সাঈদ ছিল সবচেয়ে মেধাবী। তাই পরিবারের সবার উপার্জন দিয়ে তাকে এতদূর পর্যন্ত পড়ালেখা চালিয়ে নিয়ে এসেছি। একদিন সে অনেক বড় হবে, সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে সেই আশা ছিল।
আদরের ছোট ছেলের মৃত্যুর খবরে পাগলপ্রায় মা মনোয়ারা বেগম। কান্নায় ভেঙে পড়ছেন, বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।
পীরগঞ্জ উপজেলার মনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের এক ব্যবসায়ী বলেন, সাঈদ ছিল ওই পরিবারের উজ্জ্বল নক্ষত্র। সব ভাইবোনের মধ্যে সে উচ্চশিক্ষার দিক প্রসারিত করছিল; কিন্তু শেষ সময়ে এসে ঝরে গেল সেই স্বপ্ন।
আবু সাঈদ যেমন মেধাবী ছিল, ঠিক তেমনি নম্র ও ভদ্র স্বভাবের ছেলে। তার মৃত্যুতে আমরা গ্রামবাসী গভীর শোকাহত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে রংপুর খামার মোড় থেকে শিক্ষার্থীরা বিশাল মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং ফটকের সামনে আসে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ প্রায় ২০০ রাউন্ড গুলি ও রাবার বুলেট ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ মারা যান।