রাঙামাটিতে কিশোর-কিশোরীদের ক্ষমতায়ন শীর্ষক কর্মসূচীর আওতায় পিয়ার লিডারদের রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষন
সমাজে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে এই কিশোর
কিশোরী ক্লাব গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে
——— মোঃ সামসুল আরেফিন
পলাশ চাকমা রাঙামাটিঃ রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোঃ সামসুল আরেফিন বলেছেন, সরকার প্রচেষ্ঠা চালালে ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের ন্যয় অন্যান ধর্মের ক্ষেত্রেও বিবাহ নিবন্ধন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এটি চালু করা গেলে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি শিশু জন্মের পর পরই জন্ম নিবন্ধন যদি সঠিকভাবে করতে পারলেও এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। তিনি বলেন, আমরা যদি বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে মানুষকে জানাতে পারি যে বাল্য বিবাহ সমাজকে কতটুকু পিছিয়ে রাখে তাহলে ভবিষ্যতে সমাজ আরো অনেক এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, সচেতন নাগরিক হওয়া আমাদের খুবই জরুরী। আর এই সচেতনতা শুরু হয় কিশোর কিশোরী বয়স থেকেই। সমাজে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে এই কিশোর কিশোরী ক্লাব গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
রবিবার (২৪ জানুয়ারী) সকালে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টী সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার আয়োজনে ক্লাবে সংগঠিত করে সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনে কিশোর-কিশোরীদের ক্ষমতায়ন শীর্ষক কর্মসূচীর আওতায় পিয়ার লিডারদের রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষনে প্রধান অতিথির বক্ত্যবে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কনিকা চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ব্র্যাকের প্রশিক্ষক কামরুল ইসলাম, কলমপতি ইউনিয়নের কিশোর কিশোরী ক্লাবের সদস্য সঞ্জয় কুমার দাশ, সুবর্ণা দাশ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুরাছড়ি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তরুন চাকমা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের বীথি চাকমা।
প্রধান অতিথির বক্ত্যবে জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা জানি যে মানুষের জীবনের যে কয়েকটি সময় আসে তার মধ্যে শিশু কাল, কিশোর এবং তরুন ও বৃদ্ধ কাল। প্রত্যোকটি কাল মানুষের জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের জন্য মানুষের শৈশব অবস্থা এটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি কিশোর বয়সটা বেশী গুরুত্বপূর্ন কারণ তারা কিশোর কিশোরী বয়সে নিজেদেরকে অনেকটা বড় ও স্বাধীন মনে করে। কিন্ত এই স্বাধীনতা ভোগ করতে গিয়ে তারা সামাজিক শৃংখলা থেকে বের হয়ে যেতে পারে। সাধারনত এই বয়সেই কিশোর কিশোরীদের মধ্যে নেশা খাওয়াটা শুরু হয়। এদের বিষয়ে যদি আমরা সচেতন না হই এই নেশার গ্রাস ছোঁবল মেরে কিশোর কিশোরীদের মেরুদন্ডহীন করে ফেলবে ভবিষ্যতে আর কখনোই তারা মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারবেনা। তিনি বলেন, কিশোর কিশোরীররাই আমাদের দেশের সু-ভবিষ্যৎ নাগরিক এবং এই ভবিষ্যৎ নাগরিকদের আমরা যদি সঠিকভাবে গড়ে তুলতে না পারি তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পরবে।
তিনি বলেন, আমরা আমরা জানি শিশু বয়সেই যদি কোন মেয়ের বিয়ে হয় তাহলে যেটা সমস্যা হয় একদিকে তার শারীরিক, মানসিক সমস্যা, পারিবারিক সমস্যা, সামাজিক সমস্যা, শিক্ষা সমস্যাসহ নানা সমস্যা এই বাল্য বিবাহের ফলে হয়। আমরা যদি মেয়েদের পড়ালেখা করিয়ে অন্তত ইন্টার পর্যন্ত শিক্ষিত করতে পারি তাহলে তারা ১৮বছরটা পার করতে পারবে। ভবিষ্যতের সমস্যাগুলোকে অনেকটা নিরসন করতে পারবে। তাই কিশোর কিশোরী ক্লাবের মাধ্যে সমাজে সচেতনতা বার্তাগুলো অব্যাহৃত রাখতে হবে যাতে করে আমাদের বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করা যায়।
তিনি এই প্রশিক্ষণের সফলতা কামনা করে বলেন, সরকারের প্রচেষ্ঠায় আশা করি এই কিশোর কিশোরী ক্লাবের মাধ্যমে আমাদের সমাজে সচেতনতা এবং তাদের নিজেদের পথচলাকে সুন্দর ও সুগম করে তুলতে পারবে। তিনি বলেন, যারা ইতিপূর্বে এ প্রশিক্ষণ কোর্স গ্রহণ করেছে তারা নতুন করে আবারো প্রশিক্ষণে যে সকল বিষয়ে তাদের সমস্যা ও প্রশ্ন ছিল সেগুলো নিরসন করতে পারবে। এই প্রশিক্ষনের মাধ্যমে নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণে ২টি গ্রুপে ২দিন করে মোট ৪দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে জেলার ৯৬জন কিশোর কিশোরী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে।