নিউজ ডেস্ক, বিডিকন্ঠ: ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় নিস শহরের কাছাকাছি সমুদ্র সৈকতে একটি উৎসবে জড়ো হওয়া জনতার ওপর গুলি করতে করতে দ্রুত গতিতে ট্রাক চালিয়ে দিয়ে দেয়ার ঘটনায় অন্তত ৮৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক। ৮ মাসের ব্যবধানে এটি দেশটিতে দ্বিতীয় বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা।
প্যারিস থেকে মোহা. আব্দুল মালেক হিমু ই-বার্তায় বাংলামেইলকে জানিয়েছেন, এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হতাহতের ভেতর কোনো বাংলাদেশি আছেন, এমন খবর পাওয়া যায়নি। ওই শহরে কোনো বাংলাদেশির বসবাস নেই বলে অনেকেই জানিয়েছেন তাকে।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টায় এ বর্বর ঘটনার শিকার হয়েছেন নিরীহ মানুষ। পুলিশ চালককে গুলি করে হত্যা করে ট্রাকটিকে থামিয়েছে। এই ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ।
তবে এটি জঙ্গিহামলা বলে নিশ্চিত করা হয়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এ ছাড়াও কোনো জঙ্গি সংগঠন এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি।
নিস শহরটি ইতালি সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত। ঘটনার পর স্থানীয় সময় রাত ১টা ৪০ মিনিটে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ নিজ শহর আবিনিউ থেকে প্যারিসে গেছেন।
বাস্তিল দুর্গ পতনের দিবস হিসেবে ফ্রান্সে জাতীয়ভাবে দিনটি পালন করা হয়, এ উপলক্ষেই শহরটিতে নানা অনুষ্ঠান চলছিল। উৎসবে মাততে রাস্তায় নেমেছিল মানুষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছে, নিস শহরে যখন বাস্তিল দিবস উপলক্ষে একটি আতশবাজি প্রদর্শনী চলছিল, তখন বহু মানুষের ভিড়ের ওপর একটি ট্রাক গুলি করতে করতে উঠে যায়। ফলে ঘটনাস্থলেই অনেক মানুষ মারা গেছে।
নিস শহরের মেয়র ক্রিস্তঁ এস্তরোসি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ট্রাকচালক জনতার ওপর গুলিও চালাচ্ছিল। ওই ট্রাকে অস্ত্র ও গ্রেনেডও পাওয়া গেছে।
ঘটনার পর পর টুইটারে পাওয়া ছবিতে অনুষ্ঠানস্থলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মানুষের ছবি পোস্ট করেছেন অনেক প্রত্যক্ষদর্শী। নিরপত্তার স্বার্থে শহরের বাসিন্দাদের নিজেদের বাড়ির বাইরে বের না হ্ওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয় মেয়র।
শহরটির একজন বাসিন্দা গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা কয়েকটি গুলির শব্দও শুনতে পারি। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম যে, সেগুলো হয়তো আতশবাজির শব্দ। কিন্তু সবাইকে দৌড়ে পালাতে দেখে আমরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। পরে আমরা একটি হোটেলে আশ্রয় নিই।’
ঘাতক ট্রাকচালককে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। তবে তার পরিচয় এখনও জানা যায়নি। এ ঘটনার পর সংকটকালীন জরুরি বৈঠক ডেকেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ।
গত বছরের ১৩ নভেম্বর প্যারিসের থিয়েটার সেন্টারসহ তিন স্থানে একযোগে সন্ত্রাসী হামলায় ১৩০ জনের মৃত্যু হয়। বহু হতাহতের ওই ঘটনার পর থেকেই দেশটিতে জরুরি অবস্থা রয়েছে, তার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটল।