চাঁদপুর সদর উপজেলার ২নং আশিকাটি ইউনিয়নের উত্তর রালদিয়া গ্রামের জায়েদ আলী মোল্লা বাড়িতে গতকাল ১৫ জুলাই সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে একটি নিরীহ পরিবারের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে একই বাড়ির আলী আশ্বাদ মোল্লার পরিবার। সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের হাত থেকে অন্তঃসত্ত্বা নারীও রক্ষা পায়নি।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, মৃত হাফেজ মোল্লার পরিবারের সাথে তার ভাই আলী আশ্বাদ মোল্লার দীর্ঘদিন যাবৎ সম্পত্তিগত বিরোধ চলে আসছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড মেম্বার ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে এ বিষয়ে একাধিকবার সালিস বসে। কিন্তু আলী আশ্বাদ মোল্লার বিপক্ষে রায় হলেই আর ওই রায় তিনি মানেন না। এভাবে ১০/১২টি সালিস হলেও কোনো রায়ই আলী আশ্বাদ মোল্লা মানেন না। আর এসব সালিসের রায় হাফেজ মোল্লার পরিবারের পক্ষে যায়। সর্বশেষ গত ৫/৬ মাস পূর্বে একটি বৈঠক বসে। ওই বৈঠকের রায় অনুযায়ী মৃত হাফেজ মোল্লার পরিবার চলে আসছে। আর ওই রায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মোঃ আলী আশ্বাদ মোল্লা তার দেয়া ২টি মামলা নিজ খরচে উত্তোলন করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তিনি আদালত হতে মামলা না উঠিয়ে উল্টো হুমকি দেন যে মামলা উঠাবে না বরং তাদেরকে বাড়ি ছাড়া করবে। সর্বশেষ গতকাল ১৫ জুলাই আনুমানিক সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আলী আশ্বাদ মোল্লা (পিতা জায়েদ আলী মোল্লা), খোকন মোল্লা, নাজমা বেগম, ফাতেমা বেগম, সুমা আক্তার (পিতা আলী আশ্বাদ মোল্লা) ও রানু বেগম (স্বামী আলী আশ্বাদ মোল্লা)সহ সকলে মিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মৃত হাফেজ মোল্লার বসতঘরে হামলা চালায়। তখন ঘরের ভেতর থাকা অন্তঃসত্ত্বা সালমা বেগম ও তার ছোট বোন হাফছা আক্তারের উপর তারা হামলা চালালে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজনসহ পাশের বাড়িতে থাকা মৃত হাফেজ মোল্লার স্ত্রী ও দুই ছেলে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তারা এসে দেখেন তাদের ঘরের আসবাবপত্র, আলমিরার গ্লাস এবং টিভি ভেঙ্গে তছনছ করে ফেলেছে হামলাকারীরা। ওই সময় তাদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন চলে আসলে তারা দৌড়ে তাদের বিল্ডিংয়ের ভেতর ঢোকে দরজা বন্ধ করে রাখে এবং ঘরের ভেতর নিজেদের আসবাবপত্র তারা নিজেরাই ভাংচুর করে বলে বাড়ির লোকজন জানায়।
এ দিকে হামলায় আহত অন্তঃসত্ত্বা সালমা বেগম চিকিৎসা নিতে জেলা সদর হাসপাতালে গেলে আলী আশ্বাদের ছেলে খোকন তার লোকজন নিয়ে সেখানে গিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মরত চিকিৎসকদেরকে সালমাকে হাসপাতালে ভর্তি না করানোর জন্যে চাপ দেয় এবং হুমকি দেয় বলে সালমার পরিবারের লোকজন জানান। নিরূপায় হয়ে সালমা বেগম এবং তার ভাই আক্তার চাঁদপুর মডেল থানাতে অভিযোগ দেয়ার জন্যে গেলে খোকন মোল্লা তার লোকজন দিয়ে থানাতে তদবির চালায় এবং আক্তারকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় বলে তারা জানায়। এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী আলী আশ্বাদ মোল্লার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় ফোন করলে এসআই জাকির সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। তিনি উভয় পক্ষের এবং স্থানীয় লোকের কথা শুনে উভয়কে থানাতে যাওয়ার জন্যে বলেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উভয় পক্ষ মামলা করার প্রস্তুতি নেয় বলে জানা যায়।