আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
এদিকে অভ্যুত্থানচেষ্টার ষড়যন্ত্রের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনকে অভিযুক্ত করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। তিনি গুলেনকে তুরস্কের কাছে প্রত্যর্পণ করতে মার্কিন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার রাতে সেনাবাহিনীর একটি বিদ্রোহী অংশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল ও পার্লামেন্ট ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা দখল করে নেয়। রাজধানী আঙ্কারার নিয়ন্ত্রণও অনেকটা তাদের হাত ছিল। অভ্যুত্থানচেষ্টার খবর পাওয়ার পরপর অবকাশ যাপন কেন্দ্র থাকা এরদোগান দ্রুত ইস্তাম্বুল ফিরে আসেন এবং মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে জনগণকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানান। শুক্রবার রাতভর ও শনিবার দিনভর এরদোগানের অনুগত সেনারা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। এরদোগানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার সমর্থকরা রাস্তায় নেমে আসে। শেষ পর্যন্ত শনিবার দুপুর নাগাদ বিদ্রোহী সেনারা আত্মসমর্পণ করতে শুরু করে। প্রায় তিন হাজার সেনা সরকারি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। অভ্যুত্থানচেষ্টার সময় সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ২৬৫ জন। শনিবারই এরদোগান সরকার দেশটির প্রায় ২ হাজার ৭০০ জন বিচারককে বরখাস্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম এই অভ্যুত্থানচেষ্টাকে ‘তুরস্কের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে কালো অধ্যায়’ বলে মন্তব্য করেছেন।
এদিকে অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়ার ঘোষণার পরপর শনিবার সন্ধ্যায় ইস্তাম্বুলসহ বড় শহরগুলোতে লোকজন রাস্তায় নেমে আসতে শুরু করে। জাতীয় পতাকা হাতে নেমে আসা এসব লোকের একটাই বক্তব্য ছিল- কিছুতেই দেশ কিংবা গণতন্ত্র সামরিক সদস্যদের হস্তগত হতে দেওয়া যাবে না।
শনিবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট এরদোগান অভ্যুত্থানচেষ্টার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনকে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি গুলেনকে তুরস্কের কাছে হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উদ্দেশে বলেন, ‘আমি নিজে আপনাকে এর আগে বলেছিলাম, যে ব্যক্তিটি পেনসিলভানিয়ায় ৪০০ একর জায়গা নিয়ে বাস করছে, হয় তাকে (গুলেন) বিদায় করুন নতুবা তাকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করুন। আমি আপনাকে বলেছিলাম, সে অভ্যুত্থানচেষ্টায় জড়িত। কিন্তু আপনি আমার কথা শোনেননি। আজকে অভ্যুত্থানচেষ্টার পর আবারও আমি আপনাকে একই কথা বলছি।’
তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, গুলেনকে তুরস্কের কাছে হস্তান্তরের বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হলে, তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ দেখাতে হবে ।